নতুন ভোটার হতে কি কি লাগে
জন্ম নিবন্ধন সনদ
নতুন ভোটার হতে হলে প্রথমেই আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনার জন্ম সনদ যে অবশ্যই ডিজিটাল হতে হবে। অর্থাৎ জন্ম-সনদটির একপাশে ইংরেজি এবং অন্যপাশে বাংলায় লেখা থাকবে।
পিতা মাতার এনআইডি কার্ড
আপনার এনআইডি কার্ডে আপনার পিতা-মাতার তথ্য রাখা হয়। যার কারণে আবেদনের সময় আপনার পিতামাতার এন আইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে পিতা-মাতার নামে কোন ধরনের ভুল থাকলে তা আগে থেকে সংশোধন করে নেওয়া ভালো। পিতা-মাতা যদি মৃত হয় তাহলে অবশ্যই তার সাথে মৃত্যু সনদ যোগ করতে হবে।
স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি কার্ড
আবেদনকারী যদি বিবাহিত হয় তাহলে তার স্বামী/স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি প্রদান করতে হবে। এছাড়াও বিবাহের কাবিননামা ও জমা দিতে হয়। যদিও উক্ত বিষয়গুলো বাধ্যতামূলক নয়
ব্লাড গ্রুপ
যেহেতু এখন আমাদেরকে স্মার্ট এনআইডি কার্ড প্রদান করা হচ্ছে তাই এখানে অনেক বেশি তথ্য যুক্ত করা হয়। তারা ধারাবাহিকতায় আপনার রক্তের গ্রুপ তথ্য জমা দিতে হবে। যদিও রক্তের গ্রুপের রিপোর্টটি দেওয়া অপশনাল বিষয়। অর্থাৎ এটি দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
নাগরিক সনদপত্র
নাগরিক সনদপত্র সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত আছি। যে কোন ধরনের চাকরির পরীক্ষা ভাইবা অথবা বিদেশ ভ্রমণের জন্য নাগরিক সনদপত্র অত্যন্ত জরুরী। ঠিক তেমনি ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করার জন্য নাগরিক সনদপত্র একটি বাধ্যতামূলক ডকুমেন্ট। আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা সিটি কর্পোরেশন থেকে একটি সংগ্রহ করতে পারবেন। এটি সংগ্রহ করার পর চেয়ারম্যান অথবা কাউন্সিলরের কাছ থেকে একটি স্বাক্ষরিত হয়। অনেকেই এটিকে চেয়ারম্যান প্রত্যয়ন কপি বলে থাকেন।
শিক্ষা সনদপত্র
আবেদন করার সময় একজন আবেদনকারী সাধারণত এসএসসি কিংবা এইচএসসিতে লেখাপড়া করে। উক্ত সময়ে আবেদনকারীর শিক্ষনীয় সনদপত্র গুলো জমাদান জরুরী। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে সনদপত্রের জন্ম তারিখ এবং পিতা মাতার নামের সঙ্গে অবশ্যই মিল থাকতে হবে। যদি কোন ভাবে মিল না থাকে সেক্ষেত্রে এনআইডি কার্ড তৈরি করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে প্রথমে নাম এবং জন্ম তারিখ সংশোধন করার পর এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।
অনেকের শিক্ষা সনদ থাকে না। তারা চাইলে পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স ফটোকপি জমা দিতে পারে। যদিও এ বিষয়গুলো বাধ্যতামূলক নয়। তবে আপনি যত ইনফরমেশন দিয়ে আপনার স্মার্ট কার্ডটি তৈরি করবেন পরবর্তীতে আপনি ততই বেশি সুবিধা পাবেন।
অঙ্গীকারনামা
প্রতি একজনের জন্য শুধুমাত্র একবার করে জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন করার বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে কেউ যদি একের অধিক আবেদন করে তাহলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে একটি অঙ্গীকারনামা প্রেরণ করতে হয়। আপনার নিকটস্থ কোন কম্পিউটার দোকান থেকেই অঙ্গীকারনামা সংগ্রহ করতে পারবেন।
হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করার সময় অবশ্যই ট্যাক্স রশিদ জমা দিতে হয়। এবং ট্যাক্স রশিতে কোন বকেয়া থাকা যাবে না। যদিও এগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রকাশ করে না। তবে সাধারণভাবে টেক্স পরিশোধ করা ভালো।
বিদ্যুৎ বিলের কপি
আবেদনকারীর ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে বিদ্যুৎ বিলের কপি নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিলের কপি ছাড়া পানি ,গ্যাস অথবা ইন্টারনেট বিলের তথ্য দেওয়া যেতে পারে। তবে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় বিদ্যুৎ বিলের কপির ওপরে। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিলের কপিতে আবেদনকারীর নাম না থাকলেও চলবে।
ভোটার আইডি কার্ড করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করার জন্য কোন ধরনের টাকার প্রয়োজন নেই। এটি সম্পূর্ণ সরকারি প্রসেস। সম্পূর্ণ সরকারিভাবে বিনা খরচে আপনাকে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রদান করা হবে। তবে জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদন করার সময় যে রিক্রুটমেন্টগুলো প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করতে ছোটখাটো কিছু অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। যেমন, ব্লাড গ্রুপ টেস্ট, অনলাইন আবেদন ফরম, অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ইত্যাদি।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন সময় লাগে
নতুন ভোটার আইডি কার্ড বলতে বর্তমানে স্মার্ট কার্ড কে বোঝানো হয়। কারণ বর্তমানে প্রত্যেকটা আবেদনকারীকেই স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়। যদিও আবেদন করার দীর্ঘ সময় পর স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়া যায়। বলতে গেলে প্রায় নির্বাচনের আগ মুহূর্তে স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করা হয় ।
তবে সাধারণভাবে স্মার্ট কার্ড না পেলেও অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ডের একটি কপি সংগ্রহ করা যায়। উক্ত কপিটি ও অফিশিয়াল ভাবে আপনাকে প্রদান করা হবে। এবং এনআইডি কার্ডের সকল সার্ভিস উক্ত কপির মাধ্যমে নিতে পারবেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড বের করার লিংক
যাদের স্মার্ট কার্ড পেতে অনেক বেশিদিন সময় লাগে তারা অনলাইন থেকে আইডি কার্ডের কপি বের করে নিতে পারবেন। আইডি কার্ডের কবে বের করতে হলে এখানে ক্লিক করুন। অথবা নিচের লিংক ভিজিট করে খুব সহজেই আইডি কার্ডের কপি বের করতে পারবেন।
https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
অনেক সময় ভোটার আইডি কার্ড করার পরেও কিছু ভুল থেকে যায়। এগুলো সংশোধন করার জন্য অনলাইনে একটি আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে ভ্যাট সহ প্রায় ২৩০ টাকার মতো খরচ হতে পারে। যদিও আইডি কার্ডের সংশোধনের বিষয়ের উপর চার্জ ধরা হয়।
আপনি যদি তথ্য সংশোধন করতে চান তাহলে ২০০ টাকা ফি দিতে হবে এবং ৩০ টাকা ভ্যাট প্রদান করতে হবে।
সাধারণ তথ্য সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা ফি এবং ১৫ টাকা ভ্যাট দিতে হবে।
রিইস্যু করতে হলে ৩০০ টাকা ফ্রি এবং ৪৫ টাকা ভ্যাট দিতে হবে।
জরুরী রিইস্যু করতে হলে ৫০০ টাকা ফি ৭৫ টাকা ভ্যাট প্রদান করতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন সময় লাগে
আবেদনের ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে সময় নির্ধারণ হয়। যেমন আবেদনটি যদি “ ক ” ক্যাটাগরির হয় তাহলে সর্বোচ্চ ৭ দিন সময় লাগবে। এবং “ খ ” ক্যাটাগরের জন্য ১৫ দিন “ গ ” ক্যাটাগরির জন্য ৩০ দিন এবং “ ঘ ” ক্যাটাগরির জন্য সর্বোচ্চ ৪৫ দিন সময় লাগবে।
FQA
প্রশ্ন : জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের ক্যাটাগরি কয়টি?
উত্তর: জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করা হয় চারটি ক্যাটাগরিতে। এগুলো হলো- ক ,খ ,গ ,ঘ।
প্রশ্ন: নির্বাচন ছাড়া জাতীয় পরিচয় পত্রের আবেদন করা যায় কিনা?
উত্তর: নির্বাচনের সময় সরকারিভাবে এলাকাবৃত্তিক তথ্য সংগ্রহ করে আবেদন জমা নেয়া হয়। তবে আপনি চাইলে যেকোনো সময় অনলাইন থেকে আবেদন করে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে তারা আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর অফিসে থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট , বায়োমেট্রিক এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করবেন।
প্রশ্ন: কত বছর বয়স থেকে আবেদন করতে পারবো?
উত্তর: সর্বনিম্ন ১৬ বছর থেকে আবেদন করা যাবে। তবে এনআইডি কার্ড পেতে হলে অবশ্যই বয়স ১৮ হতে হবে।
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩