পার্টটাইম ব্যবসা অনেকেই করতে চান। সকলের ফুল টাইম ব্যবসা করার সুযোগ সুবিধা থাকে না যে কারণে পার্টটাইম ব্যবসাটা অনেকের কাছেই জনপ্রিয়। আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি পার্টটাইম ব্যবসা করার আইডিয়া দেওয়ার চেষ্টা করব। আপনারা পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকলে এই আইডিয়াগুলো পেয়ে যাবেন।
পার্টটাইম ব্যবসা কি
পার্টটাইম ব্যবসা হচ্ছে স্বল্প সময়ের মধ্যে কোন কাজ করা বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে আপনি পড়াশোনা করেন তার পাশাপাশি টিউশনি করান, কোচিং এর ক্লাস নেন, যে সকল ব্যবসা গুলোতে কম সময় লাগে তেমন ব্যবসা করেন, অথবা অন্যান্য কাজ করেন এগুলোকে মূলত পার্ট টাইম জব বলে।
একটি মূল কাজের পাশাপাশি আরেকটি আজকেই পার্টটাইম বলে। অথবা আপনি একটি সরকারি চাকরি করছেন তার পাশাপাশি বিজনেস করছেন এটাও পার্ট টাইম ব্যবসা। আজকের আমাদের পুরো আর্টিকেলটি পার্টটাইম ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে। নিচে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পার্টটাইম ব্যবসা করুন
আমরা অনেকেই পার্ট টাইম ব্যবসা করতে আগ্রহী। অনেক স্টুডেন্ট রয়েছি যারা পার্ট টাইম কোন চাকরি অথবা ব্যবসা করতে চাই। আবার অনেকেই রয়েছে যারা চাকরির পাশাপাশি পার্টটাইম কিছু একটা করতে চাই। কিন্তু আমরা বুঝতে পারি না আমরা কোন ব্যবসা বা কোন কাজটি পার্ট টাইম হিসেবে করব।
তাই আজকে আমরা আপনাদের কাছে প্রায় বেশ কয়েকটি পার্টটাইম ব্যবসা করার আইডিয়া নিয়ে এসেছে। এই ব্যবসা গুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার জীবন ঘুরিয়ে নিতে পারেন। ব্যবসা গুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে আপনি আপনার ভবিষ্যৎ সুন্দরভাবে গড়তে পারবেন।
পার্টটাইম ব্যবসা করার কারণ
পার্ট টাইম ব্যবসা করে মানুষ মূলত নিজের চাহিদা পূরণ করার জন্য। ধরুন আপনি একজন স্টুডেন্ট, আপনার পক্ষে লেখাপড়া করা কষ্ট করা হয়ে উঠেছে সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে আপনি একটি পার্ট টাইম জব খুঁজবেন। কারণ, লেখাপড়া ওর সঠিকভাবে করতে চান এবং তার পাশাপাশি আপনি সকল খরচ ও বহন করতে চান।
যে কারণে আপনার পার্টটাইম জব এর প্রয়োজন। ফুল টাইম জব করলে আপনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন না। হয় শুধুমাত্র আপনাকে জব করতে হবে না হয় পড়াশোনা করতে হবে। মূলত এমন কারণ গুলোর জন্যই পার্ট টাইম ব্যবসা করতে চাই বা করার কারণ।
কোচিং সেন্টার
আমরা অনেক স্টুডেন্ট রয়েছে যারা পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করবো বলে ভাবছি। কিন্তু আমরা বুঝতে পারছি না আমরা পার্টটাইম হিসেবে কি করতে পারি। পার্ট টাইম হিসেবে আমরা বিভিন্ন কোচিং এ ক্লাস নিতে পারি। এতে করে নিজের পড়াশোনার চর্চা ও থাকে আবার অর্থ ও উপার্জন করা যায়। খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে এই কাজটি সম্পন্ন করা যায়।
আমরা অনেকেই পড়াশোনা করতে অনেক ভাল পারি। পড়াশোনা করার পাশাপাশি চাইলেও আমরা জব করতে বা অন্য স্থানে কাজ করতে যেতে পারি না। আমরা পড়াশোনার জন্য শুধুমাত্র বেকার হয়ে রয়েছি। কিন্তু আমরা চাইলে এই বেকারত্ব দূর করতে পারব। নিজের খরচ নিজে চালাতে পারবো পার্ট টাইম জবগুলো করে।
কোচিং সেন্টার আপনি নিজে প্রতিষ্ঠিত করে ও ক্লাস নিতে পারেন অথবা অন্য কারো কোচিং সেন্টারে গিয়ে ক্লাস নিয়ে আসতে পারেন। যদি আপনি কোচিং সেন্টার নিজে প্রতিষ্ঠা করেন সেক্ষেত্রে আপনার কিছু টাকা খরচ হবে। কিন্তু তা খুবই সামান্য। আর আপনি যদি অন্য কারো কোচিং এ ক্লাস নেন তবে আপনার কোন টাকা খরচ হবে না।
কোনো পুঁজি ছাড়াই আমরা কোচিং সেন্টারে ক্লাস নেওয়া পার্টটাইম হিসেবে নিতে পারি। কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিবে যোগাযোগ মাধ্যম বেড়ে যায়। অনেক পরিচিতি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে আপনি আরো বেশি স্টুডেন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন। যেহেতু আপনি পার্টটাইম হিসেবে কোচিং করাবেন সুতরাং আপনার পড়াশোনার কোনরকম ক্ষতি হবে না। এতে আপনার অনেক সুযোগ সুবিধা ও রয়েছে।
চা পাতার ব্যবসা
পার্টটাইম ব্যাবস্যা হিসেবে এই ব্যবসাটি খুবই লাভজনক। এই ব্যবসাটি করা একটু পরিশ্রম এর তবে খুবই লাভজন। এই ব্যবসাটা আপনি নিজ এলাকায় এবং অন্যান্য এলাকায়ও করতে পারেন। এই ব্যবসাটি করতে হলে আপনাকে প্রথমে দেখতে হবে কারা কেমন ধরনের চা পাতা ব্যবহার করে এবং তার দাম সম্পর্কে।
আপনি যদি তাদের চাহিদা অনুযায়ী চা পাতা দিতে পারেন তবে ওদেরও লাভ থাকবে এবং আপনার ও বেশ লাভ হবে। এই ব্যবসাটি আপনারা পার্টটাইম ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন। প্রথম দিকে আপনারা দশটি দোকান ঠিক করবেন যে দশটি দোকানে আপনারা প্রতিদিন চা পাতা বিক্রয় করবেন। চা পাতা বিক্রয় করে আপনি প্রতিমাসে দশটি দোকান থেকে প্রায় ৪ হাজার বা সাড়ে চার হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন।
যদি একটি দোকানে দশ কেজি চা পাতা মাসে প্রয়োজন হয়। তবে আপনি যেহেতু বাইরে কাজ করেছেন সুতরাং আপনার কাস্টমার আরো দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এবং আপনার ইনকামের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি পার্টটাইম ব্যবসার একটি অন্যতম আইডিয়া চা পাতার ব্যবসা করা।
ফ্রিল্যান্সিং
অনলাইন থেকে কাজ করে অর্থ উপার্জন করার প্রক্রিয়াগুলোকে ফ্রিল্যান্সিং বলে। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে স্বাধীন পেশা। নিজের ইচ্ছামত কাজ করে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে। অনলাইন এর মাধ্যমে অন্য কারো বা অন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাজ করে দেওয়া এবং সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করা।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানি তে কাজ না করে চুক্তিভিত্তিকভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা। অনেকেই ভাবেন অনলাইনে আমরা কাজ পাব কিভাবে। অনলাইনে কাজ অনেক রয়েছে। যে সকল দেশগুলো থেকে আপনাকে কাজ দিবে সেই সকল দেশগুলোর কাজের মূল্য অনেক বেশি।
কিন্তু আপনাকে দিয়ে সেই কাজগুলো কম অর্থ দিয়ে করে নিতে পারবে। এ কারণেই তারা বিভিন্ন দেশের মানুষদের কাজ দিয়ে থাকে। আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন সাইটে এই সকল কাজগুলো পেয়ে যাবেন। যে সকল কাজগুলোর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং পেশা শুরু করা যায়। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যে সকল কাজগুলো চাহিদা বেশি তা হলঃ-
- ওয়েব ডিজাইনিং
- ওয়েব ডেভেলপিং
- এসইও
- ডিজিটাল মার্কেটিং
- কপিরাইটিং
- ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
- গ্রাফিক্স ডিজাইন
- কনটেন্ট রাইটিং
- ডাটা এন্ট্রি
- সফটওয়্যার ডেভেলপিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
বর্তমান সময়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর নাম শোনেননি এমন মানুষ নেই। অনেকে জানেন না এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয় তবে নামটি সকলে শুনেছেন। আপনি যদি অনলাইনে একটু দক্ষ হয়ে থাকেন তবে এফিলেট মার্কেটিং পার্টটাইম ব্যবসার জন্য সবচেয়ে ভালো আইডিয়া। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং আপনারা পুঁজি ছাড়া ও করতে পারেন অথবা পুঁজি দিয়ে ও করতে পারেন। আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং পুঁজি ছাড়া করতে চান কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল করার মাধ্যমে অথবা অন্যান্য কাজ করার মাধ্যমে অর্থ আয় করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মনে করেন আপনার প্রোডাক্ট নেই তবে আপনার যোগাযোগ মাধ্যম রয়েছে।
যে বা যার প্রোডাক্ট রয়েছে তার কাছে থেকে আপনি প্রোডাক্টটি কাস্টমার এর কাছে পৌঁছাচ্ছেন এবং বিক্রয় করে দিচ্ছেন। এ থেকে আপনি যে প্রোডাক্টটি বিক্রয় পড়েছেন সেই প্রোডাক্ট এর মালিক কিছু আপনাকে কমিশন দেবে এ কমিশনটি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে পড়ে।
বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি এফিলিয়েট মার্কেটিং। অথবা অনলাইনের মাধ্যমে আপনারা নিজের প্রোডাক্ট বিক্রয় করেও অর্থ আয় করতে পারেন। বর্তমান সময়ে এফিলেট মার্কেটিং সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। পার্টটাইম ব্যবসায়ী হিসেবে আপনারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।
ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা
বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করার ব্যবসাকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা বলে। যেমন, বিয়ে বাড়িতে কাজ করা, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিল সহ ইত্যাদি স্থানে ব্যবসা করা।
এই সকল ব্যবসা গুলো করার জন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রয়োজন হয়ে থাকে। আপনি যদি চান পার্টটাইম জব হিসেবে এই ব্যবসাটি করতে পারেন। একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট একটি মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে পার্টনার এর ও প্রয়োজন হবে।
অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা
বর্তমান সময়ে অনলাইনের মাধ্যমে বিনা টাকায় ব্যবসা করা সম্ভব। তবে ব্যবসা করতে হলে প্রথমদিকে আপনাকে বেশ পরিশ্রম করতে হবে। অনলাইনে বর্তমান সময়ে মানুষ লাখো লাখো টাকা ইনকাম করেছে বিভিন্ন রকম প্ল্যাটফর্ম থেকে। আপনিও চাইলে অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা করতে পারেন। বাড়িতে বা ঘরে বসে আপনি অর্ডার নিতে পারেন এবং প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে পারেন।
অনেকেই ভাবছেন আপনার প্রোডাক্ট নাই তাহলে কি করবেন। অনলাইনে অনেক স্থান রয়েছে যেগুলোতে প্রোডাক্ট বিক্রি করার মাধ্যমে আপনাকে কমিশন দেবে। সেখান থেকে আপনি বেশ ভালো করে মান অর্থ আয় করতে পারবেন। ই-কমার্স এর মাধ্যমে অনেক রকম ব্যবসা করা সম্ভব। আপনি যদি অনলাইনে সামান্য দক্ষ হয়ে থাকেন তবে ই-কমার্স এর মাধ্যমে ব্যবসা আরম্ভ করতে পারেন।
ক্যাটেগরিঃ
Life Style