ভূমিকাঃ-
বাংলাদেশের অবস্থান এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে। বাংলাদেশের উত্তর দিকে রয়েছে হিমালয় পর্বত এবং দক্ষিণ সীমানায় বঙ্গোপসাগর। দক্ষিণ পূর্ব দিক জুড়ে রয়েছে মায়ানমার। এ দেশটির বাকি অংশগুলোকে ঘিরে রেখেছে ভারত। বাংলাদেশের পূর্ব প্রান্তেও রয়েছে হিমালয় পর্বত। এই সকল অঞ্চলে রয়েছে আসাম, খাসিয়া, ত্রিপুরা, জয়ন্তিকা এবং চট্টগ্রাম পাহাড়। বাংলাদেশের পশ্চিম দিকে রয়েছে রাজমহল পাহাড়, সাঁওতাল পরাগানা।
প্রাচীন কালের বাংলা
বাংলাদেশ বলতে আমরা বুঝে থাকি, হিমালয়ের দক্ষিণে ও বঙ্গোপসাগরের উত্তরে এবং ব্রহ্মপুত্রের পশ্চিমে অবস্থিত একটি ভূখণ্ডকে। প্রাচীনকালে বাংলার নির্দিষ্ট কোন নাম ছিল না। নির্দিষ্ট কোন নাম না থাকার কারণ প্রাচীনকালে অনেকবার রাজনৈতিক পালাবদল। রাজনৈতিক পালা বদলের কারণে সীমারেখা ও পরিবর্তন হয়েছে।
প্রাচীন যুগে বাংলা বলতে আমরা নির্দিষ্ট কোন অঞ্চল কে বুঝতাম না। ”আইন-ই- আকবরী” গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, বাংলা নামটি বাংলা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। আর প্রাচীনকালে বাংলা অনেক ছোট ছোট জনপদ এ বিভক্ত ছিল।
প্রাচীন বাংলার নদ নদী
বাংলাদেশের কিছু অঞ্চল ছাড়া পুরো ভূখণ্ডই এমন কোন পাহাড়-পর্বত নেই। বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানে সমতল। যে কারণে বাংলাদেশের অসংখ্য নদ নদী ও খাল বিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ নিচু অঞ্চল বলে বাংলাদেশের বাইরে থেকে অনেক নদ নদীর মূল উৎসাহ রয়েছে। ভারত এবং নেপাল থেকে অসংখ্য নদ নদী বাংলাদেশের বুক চিরে বয়ে চলেছে।
বাংলাদেশে অনেক নদী রয়েছে মূল নদী গুলোর মধ্যে রয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা, তিস্তা ও করতোয়া। পদ্মা নামে যে নদীটি পরিচিত তা গঙ্গা নদীর পূর্ব দিকের ধারা। ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নদ। ব্রহ্মপুত্রের প্রাচীন নাম ছিল লোহিত্য। এই নদী হিমালয়ের উত্তর মানস থেকে উৎপন্ন হয়ে ময়মনসিংয়ের ভিতর ঢাকা সোনারগাঁও পর্যন্ত বিস্তৃত।
ব্রহ্মপুত্রের অন্য একটি শাখা যমুনা নদী নামে পরিচিত। যমুনা নদীটি পদ্মা নদীতে মিশেছে। বাংলাদেশে যে মেঘনা নদীটি রয়েছে তার উৎপত্তি খাসিয়ার জয়ন্তিয়া পাহাড়ে। মেঘনা নদীর আরেকটি শাখা রয়েছে যেটা সুরমা নদী নামে পরিচিত। অপর আরেকটি শাখা রয়েছে যেটি মেঘনা নাম নিয়ে ভৈরব বাজারের পাশ দিয়ে ব্রাহ্মপুত্রের সাথে মিশেছে।
বর্তমানে করতোয়া নদীটি শুকিয়ে ছোট হয়ে গেছে। কিন্তু প্রাচীনকালে এটি অনেক বড় ছিল। এই নদীটির উৎপত্তিস্থল ভুটানের হিমালয় পাহাড়ে। এ নদীটি প্রথম দিকে তিস্তা নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপরে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। পূর্ব থেকে দক্ষিনে যে চোখটি যাই তাকে করোতোয়া নাম দেওয়া হয়। মধ্যের অবস্থানকে আত্রাই নাম দেওয়া হয় আর পশ্চিম অংশকে পুনর্ভবা নদী নাম দেওয়া হয়।
উপসংহারঃ-
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে আমরা বলতে পারি যে, বাংলাদেশের নদ নদী গুলোর সাথে বাংলার ইতিহাস গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। যুগে যুগে বাংলার আকার আকৃতির পরিবর্তন ঘটেছে শুধুমাত্র নদ-নদী গুলোর জন্য। নদ নদী বাংলার প্রাণ। এই সকল নদনদী গুলোর মধ্যে বহু সভ্যতা বিলীন হয়ে গেছে আবার গড়ে উঠেছে নতুন নতুন শহর বন্দর ইত্যাদি। বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর করে রেখেছে বিভিন্ন নদ নদী গুলো।
ক্যাটেগরিঃ
Education