জাপান ভিসা প্রসেস | জাপান ভিসা ফিস কত | জাপান স্টুডেন্ট ভিসা
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আশা করি সুস্থ আছেন। আজকে আপনাদেরকে জাপান ভিসা সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাইড লাইন দেওয়ার চেষ্টা করব। জাপান ভিসা নিয়ে অনেকের মনেই অনেক রকমের প্রশ্ন, সে সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের আলোচনা।
জাপান এশিয়া মহাদেশের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ পাড়ি জমায় জাপানে। কেউ ব্যবসা আবার কেউ কাজের সন্ধানে জাপানে অধিবেশন করে। অনেকে আবার উচ্চশিক্ষার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে অধিবেশন করে থাকে। তাহলে আসুন জেনে নেই জাপান ভিসা সম্পর্কিত সকল তথ্য।
জাপান ভিসা প্রসেস
জাপানি ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে দূতাবাসে যেতে হবে। প্রতি কার্য দিবসে বিতরণ করা হয়। এছাড়াও জাপানি ভিসা আবেদন ডাউনলোডে ক্লিক করেও ভিসা নেওয়া যাবে। তবে আবেদন ফরম টি নির্ভুলভাবে পূরণ করা জরুরী। ফরম পূরণ করার জন্য সেখানে একটি গাইড লাইন দেওয়া থাকে সেটি অনুসরণ করতে পারেন।
জাপানি ভিসা প্রকারভেদ
জাপানের ভিসা মূলত দুই ধরনের- স্বল্পমেয়াদী ভিসা
- অস্থায়ী ভিসা/দীর্ঘমেয়াদী ভিসা
- স্বল্পস্থায়ী ভিসা সম্পর্কে কিছু কথা
- টুরিস্ট ভিসা, ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সাথে জাপানে যেতে চায় তাদের জন্য টুরিস্ট ভিসা প্রযোজ্য।
- ট্রানজিট ভিসা, অনেকে জাপানে কিছুদিন থাকার পর জাপান থেকে তৃতীয় কোন দেশে যেতে চাই, তাদের জন্য প্রযোজ্য ট্রানজিট ভিসা।
- বিজনেস ভিসা , দেশ থেকে যারা নানারকম কনফারেন্স ,আলোচনা ,মিটিং অথবা ব্যবসার কাজে বিভিন্ন ডিল করতে স্বল্প সময়ের জন্য জাপান ভ্রমণ করে তাদের জন্য বিজনেস ভিসা রয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদী ভিসা সম্পর্কে কিছু কথা
দীর্ঘমেয়াদী ভিসা পর্যটকদের দেওয়া হয় না, জাপানে মূলত যারা স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য, সেখানে কাজ করার জন্য অথবা শিক্ষার্থী হিসেবে বেশ কিছুদিন থাকতে চায় তাদের জন্য এই ভিসা। দীর্ঘস্থায়ী সম্বন্ধে কিছু ভাগ রয়েছে নিচে দেয়া হল:-- ম্যারেজ ভিসা, জাপানি নাগরিককে বিয়ে করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হলে ম্যারেজ ভিসা নিতে হবে।
জাপান স্টুডেন্ট ভিসা
যারা লেখা পড়ার উদ্দেশ্যে চান তাদের জন্য রয়েছে স্টুডেন্ট ভিসা। সকল কাগজপত্র ঠিক থাকলেন জাপানি স্টুডেন্ট ভিসা ৫ থেকে ৬ কার্যদিবসের মধ্যে পাওয়া সম্ভব।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, চাকরির অথবা কাজের উদ্দেশ্য যেতে চায় তাদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রযোজ্য। এ ধরনের ভিসা পেতে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে।
- প্রফেশনাল ভিসা, স্পেশাল কিছু মানুষদের জন্য মূলত এই প্রফেশনাল ভিসা। প্রফেশনাল ভিসায় দীর্ঘদিন থাকার অনুমতি পাওয়া যায় এবং ওয়ার্ক পারমিট এর থেকেও অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যায়।
কিভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে
আবেদন ফরম জমা দেওয়ার জন্য সকাল ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে এম্বাসিতে যেতে হবে। সেখানে ফাইল জমা দিয়ে একটি রশিদ কপি নিতে হবে। আবেদন যদি রিফিউজ হয় তাহলে ছয় মাস পর পুনরায় আবার আবেদন করা যাবে।
আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। ইন্টারভিউ নেওয়ার পর আপনাকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হবে। যা রশিদে উল্লেখ থাকবে। নির্ধারিত দিনে দুপুর ২ টা থেকে ৪ টার মধ্যে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে। পাসপোর্ট নিতে অন্য কাউকে পাঠালে অবশ্যই আবেদনের রশিদ এবং আপনার একটি স্বাক্ষরসহ পাঠাতে হবে।
জাপান ভিসা ফিস কত
বাঙালি হিসেবে আমরা সত্যিই গর্বিত, কেননা জাপান বাঙালির জন্য কোন প্রকার ভিসা ফিরিয়ে নেয় না। ভিসা ফি না নেয়ার কারণে অনেক লম্বা একটি ইতিহাস রয়েছে। পরবর্তীতে সেই ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
জাপান ভিসা আবেদনের জন্য কোন কোন ডকুমেন্টস প্রয়োজন
জাপান ভিসা আবেদনের জন্য বেশ কিছু ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ছাড়া কখনোই আপনি জাপান প্রবেশ করতে পারবেন না ।তাহলে আসুন জেনে নিই জাপানে প্রবেশ করার জন্য কোন ডকুমেন্টস গুলো প্রয়োজন:-
- সর্বপ্রথম দূতাবাস থেকে প্রেরণকৃত ভিসার আবেদন ফরম টি প্রয়োজন হবে। আবেদনটি অবশ্যই নির্ভুল হতে হবে।
- কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদ সম্পন্ন একটি বৈধ পাসপোর্ট লাগবে।
- পাসপোর্টে অবশ্যই 2 এর অধিক ফাঁকা পৃষ্ঠ থাকতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে। কারো নামে যদি কোন মামলা থেকে থাকে তাহলে বিদেশ যেতে বাধা প্রদান করা হবে।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
- পাসপোর্ট সাইজের 2 কপি ছবি। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড অবশ্যই সাদা হতে হবে। ছবিটি এক মাসের অধিক পুরনো হওয়া যাবে না।
- ছবিতে অবশ্যই পুরো মুখ দৃশ্যমান হতে হবে, এবং ছবির পেছনের নাম ও জন্ম তারিখ লিখতে হবে।
জাপান ভিসায় বিশেষ কিছু ডকুমেন্ট
- এয়ারলাইনস টিকিট বুকিং এর কপি থাকতে হবে। জাপানের যাওয়া এবং আসার তারিখ স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে।
- আপনার নামসহ হোটেল বুকিং এর কপি।
- টুরিস্ট ভিসার ক্ষেত্রে জাপানের দৈনন্দিন কার্যক্রমে ভ্রমনসূচী তৈরি করে দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
- একটি সচল ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। গত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।
- জাপানের যদি কোনো বন্ধু অথবা পরিবারের সাথে দেখা করতে চান তাহলে বেশ কিছু নথি প্রয়োজন হয় যেমন, যদি পরিবারের সাথে দেখা করতে চান তাহলে নাগরিক অবস্থার উন্নতি জন্মসনদ ইত্যাদি। যদি বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেখা করতে চান তাহলে তার সাথে এক কপি ছবি রশিদ ফলের বিবরণ ইত্যাদি।
- চাকুরীজীবি হলে অফিস থেকে একটি চিঠি নিতে হবে।
- কোভিড ১৯ ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
জাপানে যাবার জন্য মূলত উপরের ডকুমেন্টগুলো সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত ডকুমেন্টসগুলো থাকলেই একজন নাগরিক জাপানি প্রবেশ করতে পারবেন। প্রিয় পাঠক আমরা আপনাকে বুঝাতে পেরেছি।
জাপান ভিসার মেয়াদ কতদিন
আমরা অনেকেই অনেক দেশে বিভিন্ন কাজের জন্য যেতে চাই। আমরা অনেকেই জানিনা জাপান ভিসার মেয়াদ কতদিন সে সম্পর্কে। জাপান ভিসা মেয়াদ থাকে প্রায় পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর পুনরায় আবার করতে হয়। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন মেয়াদ সম্পর্কে।
জাপানে টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কি বাড়ানো যায়
আপনারা অনেকেই রয়েছেন যারা ভ্রমণ অনেক ভালোবাসেন। যে কারণে আপনারা অনেকেই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আপনার অনেকে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যায় কিনা সে সম্পর্কে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যায় না।
জাপান ও তার ব্যতিক্রম নয়। জাপানে টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যায় না। আমরা জানতে পারি যে জাপানি ইমিগ্রেশন টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ বাড়ায় না। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
জাপান যেতে কত টাকা লাগে
জাপান যেতে মোট খরচ হয় প্রায় সাত থেকে আট লক্ষ টাকা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও বেশি টাকা খরচ হতে পারে। তবে সাত থেকে আট লক্ষ টাকার মধ্যে জাপান যাওয়া সম্ভব। এছাড়াও জাপানে অনেক ধরনের ভিসার প্রকারভেদের ওপর নির্ভর করে টাকা খরচ হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে জাপানে অনেকে কাজ করার উদ্দেশ্যে ভিসা সংগ্রহ করতে চায় তাদেরকে একটু বেশি পরিমাণ খরচ হয়।